থ্যালাসিমিয়া রোগীর খাবার নিয়ে সব সময়ই চিন্তা থাকে, রোগী এবং তার বাবা-মায়ের। এটা বাংলাদেশের সাধারণ খাবারগুলো একটা তালিকা। এই তালিকা অনুসরণ করে চললে আশা করি রোগী ভালো থাকবে।
যে সমস্ত খাবারে অধিক পরিমাণ লৌহ (High Iron Diet) আছে, সেই সমস্ত খাবার অবশ্যই পরিহার করবে এবং যে সমস্ত খাবারে কম পরিমাণ লৌহ ( Low Iron Diet) আছে, সেই সমস্ত খাবার খেতে হবে। তাই থ্যালাসিমিয়া রোগীরা কোন ধরনের খাবে তা নীচের খাদ্য তালিকা থেকে কম লৌহ যুক্ত খাবার বেছে নিবে।
খাদ্য সামগ্রীর নাম
১। মাংস ও মাংস জাতীয় খাদ্য
অধিক লৌহযুক্ত খাবার (High Iron Diet)


গরুর মাংস, খাসীর মাংস, কলিজা, ডিমের কুসুম, ইলিশ, কৈ, চিংড়ি, চিতল, শিঙি, টেংরা ও ছোট মাছের শুটকি।
কম লৌহ্যযুক্ত খাবার (Low Iron Diet)
রুই, কাতল, পাংগাস, বোয়াল, মাগুর, সরপুঁটি, সোল ও বাচা মাছ।
২। শাকসবজি
অধিক লৌহযুক্ত খাবার (High Iron Diet)
কচুশাক, লালশাক, পালংশাক, পুইশাক, ফুলকপি শাক, পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, ফুলকপি, সিম, বরবটি, মটরশুঁটি, কাঁকরোল, কাচা পেপে, সাজনা, কাচা টমেটো।
কম লৌহ্যযুক্ত খাবার (Low Iron Diet)
বাঁধাকপি, মিষ্টি আলু, করলা, মিষ্টি কুমড়া, ঢেড়স, মূল্য, শালগম, কাচা কলা, ঝিংগা, পাকা টমেটো, লাউ, চাল কুমড়া।
৩। ফল
অধিক লৌহযুক্ত খাবার (High Iron Diet)
আনারস, বেদানা, শরিফা, খেজুর, তরমুজ
কম লৌহ্যযুক্ত খাবার (Low Iron Diet)
পাকা আম, লিচু, কলা, পাকা পেপে, কমলালেবু, বেল, জামরুল, আমলকি, কাগজী লেবু, পেয়ারা, আংগুর।
৪। খাদ্য শষ্য এবং তা থেকে তৈরী খাবার
অধিক লৌহযুক্ত খাবার (High Iron Diet)
খৈ, কর্ণ ফ্লেক্স (Corn Flakes), শিশু খাদ্য যেখানে লৌহ সংযুক্ত করা আছে যেমন- সেরিল্যাক(cerelac), গরু/ছাগলের দুধ (cow & goat milk) ইত্যাদি
কম লৌহ্যযুক্ত খাবার (Low Iron Diet)
চাল, ময়দা, পাউরুটি।
৫। ডাল
অধিক লৌহযুক্ত খাবার (High Iron Diet)
ছোলা, ছোলার ডাল
কম লৌহ্যযুক্ত খাবার (Low Iron Diet)
মসূর ডাল
৬। বিবিধ
অধিক লৌহযুক্ত খাবার (High Iron Diet)
গুড়, বাদাম (almonds), চীনাবাদাম, কিসমিস, তিল, পান, জিরা, ধনে, সরিষা
কম লৌহ্যযুক্ত খাবার (Low Iron Diet)
মধু, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার যথা- দই, ছানা, পনির, রসগোল্লা ইত্যাদি।
থ্যালাসিমিয়া রোগীর খাবার এর বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


ডাঃ ফাহিম আহমাদ ২০০৬ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রী লাভ করেন। সরকারী বিধি অনুযায়ী দুই বছরের অধিক সময় গ্রামে কাজ করার পর শিশু রোগ সম্পর্কে উচ্চতর পড়াশুনা শুরু করেন। প্রায় ৪ বছর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু রোগ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এমডি(শিশু) শেষ করার পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে রেজিষ্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-এয় জুনিয়র কনসালটেন্ট (পেডিয়াট্রিক্স) হিসেবে কর্মরত আছেন।
Thanks for information
দয়া করে জানাবেন, থ্যালাসিমিয়া হলে কি ছেলেদের মুসলমানি করতে কোন সমস্যা।
না। থ্যালাসেমিয়ার (beta thalassaemia, HbE disease, HbE beta thalassaemia etc) বাচ্চাদের মুসলমানি করাতে কোন সমস্যা নেই।
তবে, হিমোগ্লোবিনোপেথি (Sickle cell disease etc) এর কোন কোনটাতে সমস্যা হয়। এগুলোও থ্যালাসেমিয়ার মত। এবং অনেক সময় না বুঝে থ্যালাসেমিয়া বলা হয়। সবচেয়ে ভালো হবে আপনি একজন সার্জনকে দিয়ে মুসলমানি করাবেন এবং তার সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ করে নিবেন। আশাকরি কোন সমস্যা হবে না।
Cam I take advice from you
অবশ্যই। আপনি কোথায় থাকেন?
রোগীর নাম : শাকিরিন
থ্যালাসেমিয়ার ধরন:
ই-বেটা থ্যালাসেমিয়া
ধরা পড়েছে গত ১০ বছর আগে
এখন তার বয়স ১২
তার ওজন ৩০ কেজি
১০ বছর থেকেই তার হিমোগ্লোবিন 8 এবং 9 এর মাঝে থাকে। এই দশ বছরে তাকে একবারও রক্ত দেয়া হয় নাই যেহেতু একটা নিয়ম আছে সেভেন (হিমোগ্লোবিন)এর নিচে আসলে রক্ত দিতে হয়।
এক্ষেত্রে এই রুগীটির যদিও কখনো সেভেনের নিচে আসে নাই কিন্তু অতি সম্প্রতি তার হিমোগ্লোবিন লেবেল নেমে ৭.৮ এসে দাঁড়িয়েছে।
সে হাইড্রনিক্স প্রতি সপ্তাহে চারটি এবং ফলিসন প্রতিদিন একটি করে খাচ্ছে। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ এ
তার ফেরিটিন ২২০ ছিল যা স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের মত।
এক্ষেত্রে ফেরিটিন যেহেতু কম সেক্ষেত্রে আইরনসমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খাইয়ে তার হিমোগ্লোবিন লেভেলটা সামান্য হলেও ইনক্রিজ হবে কিনা ?এটাই প্রশ্ন!
উত্তর পেলে খুবই উপকৃত হব
আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। আপনার রোগীকে আয়রন আছে এমন খাবার দেয়া যাবে না। কারণ, তার হিমোগ্লোবিন কম রোগের কারণে আয়রণের অভাবে না। আপনি তার চিকিৎসকদের সাথে পরামর্শ করুন। যদি হিমোগ্লোবিন কম থাকার কারণে তার বৃদ্ধি (ওজন, উচ্চতা, মনোযোগ, বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি) ব্যহত হয় তাহলে তার রক্ত পরিসঞ্চালন লাগতে পারে।
আলহামদুলিল্লাহ আপনার উত্তর পেয়ে খুবই উপকৃত হইলাম যদিও মেসেজটা আমি দেরিতে দেখেছি। তাই আমিও দেরি করে জাযাকাল্লাহু খাইর দিতে দেরি করে ফেললাম।
ফিজিক্যালি আপনার কাছ থেকে উপকার পাওয়ার জন্য আমরা আপনার সাথে কিভাবে সরাসরি যোগাযোগ করব আপনার ঠিকানাটা দিলে বড়ই উপকার হত যদি কিছু মনে না করেন।
আমি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে কর্মরত আছি। কাছাকাছি থাকলে ডিপার্টমেন্টে দেখা করতে পারেন।
আমার ছেলের ৪ বছর থ্যালাসেমিয়া হয়েছে।আপনার ফোন নাম্বার টা যদি দিতেন আপনার সাথে যোগাযোগ করতাম।
অনলাইনে ফোন নম্বর দেয়ার সুযোগ নাই। আপনি আপনার নিকটবর্তী একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন। ধন্যবাদ।
আসসালামু আলাইকুম।
আপনার ফোন নম্বর টা কি পাওয়া যাবে স্যার
??
দুঃখিত, অনলাইনে নম্বর দেয়ার সুযোগ নাই। কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন। অথবা, নিজেদের নিকটবর্তী কোন শিশু বিশেষজ্ঞএর সাথে পরামর্শ করুন।
আমার ছেলের বয়স ১বছর ৭মাস। থ্যালাসেমিয়া বেটা মাইনর। হিমোগ্লোবিন লেবেল ৮-৯. স্থানীয় শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলছি। ২/৩ মাস পরপর জ্বর আসছে। ২দিনে জ্বর সেরে আবার ২দিন আবার জ্বর আসছে। যখন জ্বর আসে আধাঘণ্টার মধ্যে ১০৪+ হয়ে যায়। নাপা/এইচ খেলে জ্বর পড়ে যায়। চিকিৎসা ও খাবারের বিষয়ে পরামর্শ চাচ্ছি।
প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। আপনার ছেলের সমস্যাতে জটিলতা আছে। তাকে একজন শিশু হেমাটোলজি অনকোলজি বিশেষজ্ঞকে দেখাতে পারেন। থ্যালাসেমিয়া রোগী কিছু বিশেষ সমস্যায় ভুগে। বিস্তারিত ইভালুয়েশন না করে কিছু বলা কঠিন। খাবারের বিষয়ে আলাদা কিছু নাই। নিরাপদ, স্বাভাবিক খাবার খাবে। লৌহ বেশি এমন খাবার এড়িয়ে চলবে। জ্বরের সাথে খাবারের সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
আসসালামু আলাইকুম, আমার নাম নাবিলা। আমার বয়সে ২১। আমি একজন গর্ভবতী। আমার ৫ মাস চলছে। আমার ওজন ৫৬, আমার উচ্চতা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। আমার হিমোগ্লোবিন ৮ পয়েন্ট। আমার থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়েছে, সেটা হচ্ছে বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর। আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমার খাবারের তালিকা কি কি হওয়া উচিত? এ থ্যালাসেমের কারণে কি আমার বাচ্চার কোন ক্ষতি হবে? সর্বোপরি আমার কি করা উচিত দয়া করে যদি বলতেন!!
ওয়ালাইকুমুসসালাম। আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। স্বাভাবিক অবস্থায় থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোগীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। অর্থাৎ থ্যালাসেমিয়া খাদ্য তালিকা পুরোপুরি না মানলেও চলে, শিথিলতা আছে। তবে, গর্ভাবস্থা একটু জটিলতা তৈরি করে। মায়ের শরীরের উপরের অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয় (যেহেতু থ্যালাসেমিয়া মাইনরের রোগীর কিছুটা রক্তস্বল্পতা থাকে)। রক্তচাপ বেশি হতে পারে, ডেলিভারির সময় অল্প রক্তপাতে সমস্যা হতে পারে। ফলশ্রুতিতে, বাচ্চার বৃদ্ধিও কিছুটা ব্যহত হতে পারে। বাচ্চার ওজন কম হতে পারে। এবং কম ওজন হওয়ার কারণে কিছু জটিলতা তৈরি হয়। ফলিক এসিড ৫মিগ্রা করে খেতে থাকলে সমস্যা কম হয়। তবে, একেকজন মায়ের ক্ষেত্রে অবস্থা একেক রকম হতে পারে। ফলোআপে থাকতে হবে।
সারাংশ হলো, ঝুকি আছে তবে খুব বেশি না। ভয়ের কিছু নাই কিন্তু সাবধানতার অনেক কিছু আছে। আপনাকে নিয়মিত একজন গাইনী ও অবসটেট্রিক্স বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে (গর্ভকালীন জটিলতা আগে সনাক্ত করা ও সমাধান করার জন্য) এবং একই সাথে এই সময়টাতে একজন রক্তরোগ বিশেষজ্ঞকেও দেখানো (হিমোগ্লোবিন, রক্তের আয়রন, খাবার ইত্যাদি সময় সময় পরীক্ষা করে নির্ধারণ করার জন্য)। আর, জন্মের পর একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে বাচ্চার রক্ত পরীক্ষা করতে হবে যে তার এই সমস্যাটা আছে কিনা। আল্লাহ আপনাকে ও আপনার বাবুকে ভালো রাখুক।
Dear Sir,
Have a nice day.
My wife is Thalassemia patient (disease: Beta thalassemia), Hb lebel always found around 8.5%.
Till no blood transmission to her, doctors advice that no need this time.
Can she continue Iron rich food continue? Please let us know.
Thanks
Thank you for your question. You have not mentioned complete diagnosis. There are different levels of severity in beta thalassemia- major, intermidia, minor. As she does not require blood transfusion, i assume she has beta thalassemia minor or intermidia. This type of patient can eat normal food (including iron containing foods in small amount). But these decisions are made separately for each patient. If serum ferritin level is above normal she would have to avoid iron rich food.
You should consult with a hematologist. He will assess the condition of your wife’s thalassemia and advise accordingly.
আসসালামু আলাইকুম
থেলাসেমিয়া রোগী কি হাঁসের মাংস, বেগুন খেতে পারবে?
আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। যে থ্যালাসেমিয়া রোগীরা নিয়মিত রক্ত পরিসঞ্চালন করেন তারা হাসের মাংস না খেলে ভালো। তবে, বেগুন স্বাভাবিক পরিমানে খেতে পারবেন।